এবারও হলফনামায় স্থাবর সম্পদের দাম জানালেন না পার্থ

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও হলফনামায় স্থাবর সম্পদের মূল্য জানালেন না বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। নিজের বাড়ির কথা এবার লিখেছেন নির্মাণাধীন। আর নবম সংসদে লিখেছিলেন রাজধানীর বারিধারায় যৌথ অংশীদারত্বে তিনতলা বাড়ি আছে। কৃষিজমির পরিমাণ ও দামের কথাও জানাননি। শুধু লিখেছেন কৃষিজমি যৌথ মালিকানাধীন, যা এখনো বণ্টন হয়নি। হলফনামায় স্থাবর সম্পদের তথ্য লেখার ঘরে তিনি কোনো কিছুর আর্থিক মূল্যই লেখেননি। তবে অস্থাবর সম্পত্তির দাম লিখেছেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ঢাকা-১৭ আসনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামার তথ্য ও নবম সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা তথ্যে এটা দেখা গেছে। জানা গেছে, এবারও ঢাকার পাশাপাশি ভোলাতেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আন্দালিব রহমান।

বিজেপির চেয়ারম্যান অস্থাবর সম্পত্তির কথা লিখেছেন, একটি গাড়ি আছে, যার দাম ৬০ লাখ টাকা। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় কোনো গাড়ি ছিল না বলে জানিয়েছিলেন। এবার নগদ ৩১ লাখ এক হাজার ১৯৬ টাকা আছে, যেটা নবম সংসদে ছিল ২৬ লাখ ১৮ হাজার ৮৪ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৪৩ লাখ ২০ হাজার ৪৫৫ টাকা, যেটা নবম সংসদে ছিল ৩৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩৭৪ টাকা। এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার ১৭ হাজার ৪৬০টি, যার দাম ১৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, যেটা নবম সংসদের সময় ৪২ লাখ ৯১ হাজার টাকা দামের ৪৩ হাজার শেয়ার ছিল। ১০০ তোলা স্বর্ণ আগেও ছিল, এখনো তা-ই। পুরনো আসবাবপত্রের দাম এক লাখ ২৪ হাজার ৩৭৫ টাকা, যেটা নবম সংসদে ছিল দুই লাখ ২৫ হাজার ৪৭ টাকা।

আন্দালিব রহমান পার্থর শিক্ষাগত যোগ্যতা বার-এট ‘ল’। পেশা হিসেবে আইন পেশা ও ব্যবসা জানানো হয়েছে, যেটা নবম সংসদে ছিল শুধু ব্যবসা।
ব্যবসা থেকে পার্থ বছরে আয় করেন ৬ লাখ ৭ হাজার ৬৯৬ টাকা আর আইন পেশা থেকে ১৫ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪ টাকা; যেটা নবম সংসদ নির্বাচনে ব্যবসা থেকে আয় ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫০ টাকা।

এবার দ্রুত বিচার আইনে ও বিস্ফোরফ দ্রব্য আইনে মামলা চলমান আছে বলে জানান আন্দালিব রহমান। আর সাতটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে জানান। কিন্তু নবম সংসদ নির্বাচনে মামলার কথা বিষয়ে লেখা ছিল ‘প্রযোজ্য নেই’।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় (আবাসিক বা বাণিজ্যিক) স্থাবর সম্পদের তথ্য দিতে গিয়ে আন্দালিব রহমান জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন রয়েছে কিন্তু তার মূল্য লিখেছেন অজানা। আর এটা যৌথ মালিকানার (৩/১ অংশ) উল্লেখ করেছেন। কৃষিজমির পরিমাণ জানাননি পার্থ। আর এসব জমি যৌথ মালিকানাধীন, যা এখনো বণ্টন হয়নি বলে জানান। অকৃষি জমির ঘরে লিখেছেন প্রযোজ্য নয়।

আর নবম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায়ও স্থাবর সম্পত্তির জায়গায় কৃষিজমির পরিমাণ জানাননি পার্থ। আর এসব জমির তথ্য দিতে গিয়ে লিখেছেন, যৌথ মালিকানাধীন, যা এখনো বণ্টন হয়নি। অকৃষি জমির কথা উল্লেখ করেননি। আবাসিক বা বাণিজ্যিক এলাকায় দালানের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, যৌথ মালিকানার (৩/১ অংশ) তিন তলাবিশিষ্ট দালান, যার মূল্য লেখেননি। তবে হলফনামার সঙ্গে যুক্ত করা বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের বিবরণীতে বারিধারা রোড ৭-এর ২৫ নম্বর বাড়ির কথা জানিয়েছেন। যেটা তিনতলা দালান। তবে মূল্য লেখা হয়েছে অজানা।

দায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন নিজ মালিকানাধীন ব্রিটিস স্কুল অব ‘ল’ শিক্ষক ও স্টাফদের বেতন-ভাতাদিসহ ১০ লাখ ৪২ হাজার ২৬৫ টাকা, যেটা নবম সংসদ নির্বাচনে দেখিয়েছেন ২২ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ঢাকা-১৭ আসনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় আন্দালিব রহমান ঠিকানা উল্লেখ করেছে, আন্দালিব রহমান। বাবা নাজিউর রহমান, মা-মিসেস রেবা রহমান, ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ঢাকার। বাসা হোল্ডিং-২৫, রাস্তা-৭, ডাকঘর-গুলশান মডেল টাউন, ১২১২ গুলশান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

নবম সংসদ নির্বাচনে ভোলা-১ (সদর) আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন আন্দালিব রহমান। সেখানে ঠিকানা দিয়েছেন ৯৯০, শান্তনীড়, উকিলপাড়া, ভোলা সদর, ভোলা। জানা গেছে, এবারও ঢাকার পাশাপাশি ভোলায়ও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পার্থ।

নবম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের করপোরেট শাখা থেকে এশিয়াটিক ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেডের নামে ৩৩ লাখ ৯ হাজার ৬২৬ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এই ঋণ নেওয়ার ক্যাটাগরিতে উল্লেখ করা হয়, ‘কোন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা ডিরেক্টর হওয়ার সুবাদে ঋণ নেওয়া হয়েছে।’ ঋণ নেওয়ার তারিখ উল্লেখ করেছে ১৬ নভেম্বর ২০১৮।